নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর-রামনগর-ছান্দ্রা ৪ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। পুরো অংশজুড়ে অসংখ্য খানাখন্দে ভরা সড়কটিতে পথচারীদের হাঁটাও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সড়কটিতে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ৭/৮টি গ্রামের প্রায় বিশ হাজার মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির গৌরীপুর মাইথারকান্দি থেকে রামনগর পর্যন্ত রাস্তার কার্পেটিং উঠে গিয়ে অসংখ্য স্থানে খানাখন্দে সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও ইট পর্যন্ত উঠে দিয়ে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার বেহাল দশার কারণে সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে হেলেদুলে চলছে। বর্তমান সরকারের ১৫ বছরে রাস্তাটির গৌরীপুর ইউনিয়নের আড়াই কিলোমিটার অংশে কোন সংস্কার কাজ হয়নি। সংস্কারের অভাবে খানাখন্দে ভরা এ রাস্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নসিমন, ভটভটি, অটোবাইক ও ভ্যান চলাচল করছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে মাঝেমধ্যে। গৌরীপুর গ্রামের ফজলুল হক, কালু মিয়া, বাদশা মিয়া, সুভাষ ঘোষ ও আব্দুল হাকিম বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে পোহাতে অতীষ্ট হয়ে গেছি আমরা । এ রাস্তাটি যেন দেখার কেউ নেই। চেয়ারম্যান মেম্বাররা কয়েকবার লোকজন এনে মাপতে দেখেছি। মাপা পর্যন্তই শেষ, কাজ শুরু হবে কিনা জানিনা।
এ রাস্তা দিয়ে অটো চালাতে গিয়ে গা-হাত-পা ব্যথা হয়ে যায়। অটোর কল-কব্জা খুলে পড়ে। প্যাসেনঞ্জারদেরও খুব কষ্ট হয়। এ রাস্তা কবে ঠিক হবে আল্লাহই জানে, ক্ষোভের সুরে কথাগুলো বলেন ওলানপাড়া গ্রামের অটোরিকশা চালক ইব্রাহিম মিয়া।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গৌরীপুর বাজার থেকে হাটচান্দিনা, গৌরীপুর গ্রাম, ওলানপাড়া, রামনগর, ছান্দ্রা হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জিংলাতুলি গ্রামে মিলেছে । সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৪ কিলোমিটার। ২০০৩ সালে এলজিইডির উদ্যোগে সড়কের (গৌরীপুর বাজার থেকে রামনগর পর্যন্ত ২.৫ কিলোমিটার অংশে সংস্কারকাজ হয়। ১২ বছর পর ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৯০লাখ টাকার টেন্ডার হলেও অজ্ঞাত কারনে ঠিকাদার কাজটি করেনি বলে এলাকাবাসী জানান । ঠিকাদর কাজ না করায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একাধিকবার সড়কটি পরিদর্শন করেন। সড়কটির বেহাল অবস্থা দেখে নতুন করে আড়াই কোটি টাকা বরাদ্ধের প্রস্তাব পাঠানো হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর এ প্রস্তাব বাতিল করে দেয়ায় সড়কটি সংস্কারে আলোর মুখ দেখেনি ।
সড়কটি সংস্কারে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে দায়ী করে গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল হাসেম সরকার বলেন, উপজেলা পরিষদের প্রতিটি মাসিক সভায় সড়কটির বেহাল অবস্থার কথা তুলে ধরেছি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা(পিডি)সহ কয়েকবার সড়কটি পরিদর্শন করার পরও বরাদ্ধ আসছে না। আমার ইউনিয়নের প্রধান সড়ক গৌরীপুর- রামনগর সড়কটির দীর্ঘদিন কাজ না হওয়া দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
দাউদকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী(স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর) মোঃ আহসান আলী জানান, আমি আসার আগে এক ঠিকাদার কাজটি ফেলে চলে যাওয়ার কথা শুনেছি । এখন পুনরায় আবার নতুন করে উল্লেখিত সড়কটির স্টিমিট পাঠানো হয়েছে। এখন শুধু টেন্ডার প্রক্রিয়া বাকি।